Saturday, July 23, 2016

ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর পর্দা কি?

ব্যভিচারের ছিদ্রপথ বন্ধ করার আর এক উপায় হল পর্দা। রমণীর দেহ-সৌষ্ঠব প্রকৃতিগতভাবেই রমণীয়। কামিনীর রূপলাবণ্য এবং তদুপরি তার অঙ্গরাগ বড় কমনীয়; যা পুরুষের কামানল প্রজ্জলিত করে। তাই পুরুষের দৃষ্টির অন্তরালে থেকে নিজের মান মর্যাদা রক্ষা করতে নারী জাতির প্রতি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর এই বিধান এল। এই জন্যই কোন গম্য (যার সাথে নারীর কোনও সময়ে বিবাহ বৈধ হতে পারে এমন) পুরুষের দৃষ্টিতে তার সৌন্দর্য লাবণ্য প্রকাশ করতে পারে না। পক্ষান্তরে যার সাথে নারীর কোনও কালে বিবাহ বৈধ নয় এমন পুরুষের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারে। কারণ এদের দৃষ্টিতে কাম থাকে না। আর যাদের থাকে তারা মানুষ নয়, পশু। (কাদের সাথে কোনও কালে বিবাহ বৈধ নয় তাদের কথা পরে আলোচিত হবে।) অনুরূপ নারীর রূপ বিষয়ে অজ্ঞ বালক, যৌনকামনাহীন পুরুষ এবং অধিকারভুক্ত ক্রীতদাসের সাথে মহিলা দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারে।
পর্দার ব্যাপারে আল্লাহর সাধারণ নির্দেশঃ-

﴿وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى﴾

‘‘(হে নারী জাতি!) তোমরা সবগৃহে অবস্থান কর এবং প্রাক্-ইসলামী (জাহেলিয়াতী) যুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়িও না।’’ (সূরা আহযাব (৩৩) : ৩৩)

﴿يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلا يُؤْذَيْنَ﴾

‘‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রী, কন্যা মুসলিম রমণীগণকে বল, তারা যেন তাদের চাদরের
কিয়দংশ নিজেদের (মুখমন্ডলের) উপর টেনে নেয়। এতে (ক্রীতদাসী থেকে) তাদেরকে চেনা সহজতর হবে; ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। (লম্পটরা তাদেরকে উত্যক্ত করবে না।)’’ (সূরা আহযাব (৩৩) : ৫৯)

﴿وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ﴾

‘‘মুমিন নারীদেরকে বল, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে লজ্জাস্থান হিফাযত করে এবং যা প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের (অন্যান্য) আভরণ প্রদর্শন না করে, তাদের গ্রীবা বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় (উড়না অথবা চাদর) দ্বারা আবৃত করে।(সূরা আন-নূর (২৪) : ৩১)

﴿وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعاً فَاسْأَلوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

‘‘(হে পুরুষগণ!) তোমরা তাদের (নারীদের) নিকট হতে কিছু চাইলে পর্দার অন্তরাল হতে চাইবে। বিধান তোমাদের এবং তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্র।’’ (সূরা সূরা আহযাব (৩৩) : ৫৩)
সুতরাং সকল নারীর নিকট পর্দাঃ- আল্লাহ তদীয় রসূলের আনুগত্য।
  • পর্দা, প্রেম চরিত্রের পবিত্রতা, অনাবিলতা নিষ্কলঙ্কতা।
  • পর্দা, নারীর নারীত্ব, সতীর সতীত্ব, সম্ভ্রম মর্যাদা।
  • পর্দা,  লজ্জাশীলতা, অন্তর্মাধুর্য সদাচারিতা।
  • পর্দা, মানবরূপী শয়তানের দৃষ্টি থেকে রক্ষাকবচ।
  • পর্দা, ইজ্জত হিফাযত করে, অবৈধ প্রণয়, ধর্ষণ, অশ্লীলতা ব্যভিচার দূর করে, নারীর মান মূল্য রক্ষা করে। জিনিস দামী মূল্যবান হলেই তাকে গোপনে লুকিয়ে রাখা হয়। যত্রেতত্রে কাঁচ পাওয়া যায় বলেই তার কোন কদর নেই। কিন্তু কাঞ্চন পাওয়া যায় না বলেই তার বড় কদর। পর্দানশীন নারী কাঁচ নয়; বরং কাঞ্চন, সুরক্ষিত মুক্তা।
  • পর্দা, নারীকে কাফের ক্রীতদাসী থেকে বাছাই করে সম্ভ্রান্তা মুসলিম নারীরূপে চিহ্নিত করে।
  • পর্দা, আল্লাহর গযব জাহান্নামের আগুন থেকে পর্দা।
  • নারীদের প্রধান শত্রু তার সৌন্দর্য যৌবন। আর পর্দা তার লালকেল্লা।

No comments:

Post a Comment